पुरूलिया के काशीपुर में 2000 साल पुरानी दुर्गा पूजा आज भी राजसी अंदाज में

পুরুলিয়া : নেই রাজতন্ত্র, তবুও রাজকীয় ভাবেই পূজিতা হয়ে আসছেন কাশিপুর রাজ পরিবারের দুই হাজার বছরের পুরোনো প্রাচীন অষ্টধাতুর কুলদেবী রাজরাজেশ্বরী শিখারবাসিনী দুর্গা । এই কাশিপুর দেবীবাড়ির পুজো উজ্জয়নীর ধার নগরের নিয়ম ও আচারবিধি মেনে বীরাচারী তন্ত্র মতে জিতাষ্টমীর দিন থেকে ১৬ দিন ধরে পুজো হয় । আজও পুজোর দিন মায়ের আগমনীর পায়ের ছাপ পড়ে দেবী বাড়িতে । প্রাচীন এই রাজ পরিবারের রাজকীয় পুজো দেখতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই ভিন রাজ্য থেকেও ভিড় জমান হাজারে হাজারে উৎসাহী মানুষ । কাশিপুর রাজার রাজকন্যার দেবীবাড়িতে হয় এই শিখারবাসিনীর পুজো । একইসঙ্গে কাশিপুর রাজবাড়ির মহলের অন্দরেও দুর্গা পুজো হয়ে আসছে প্রায় কয়েক দশক করে । প্রায় দুহাজার বছর আগে উজ্জয়নীর ধার নগরের মহারাজা বিক্রমাদিত্যের বংশধর জগদদৌ সিংদেওর কনিষ্ট পুত্র দামোদর শেখর সিংদেও বাহাদুর জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার কাশিপুরে চাটলা পঞ্চকোটরাজ প্রতিষ্ঠা করেন । সেই সময় দুর্গাপুজোর আরাধনাও শুরু করেন তিনি । প্রথমে এই অঞ্চলের নাম ছিল জঙ্গলমহল । দামোদর শেখর সিংদেও এই কাশিপুর এলাকায় রাজত্ব স্থাপন করার পর তার নামানুসারে এই জায়গার নাম হয় শিখরভূম । আর এই শিখরভূমে দূর্গাদেবী পূজিতা হওয়ায় এই দুর্গাদেবীর নাম রাখা হয় শিখরবাসিনী । এই অষ্টধাতুর কুলদেবী রাজরাজেশ্বরী শেখরবাসিনী পুজো এই অঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীনতম দুর্গা পুজো । এই পুজোর বিশেষ গুরুত্ব হল ধার নগরে যেহেতু ১৬ দিনে ১৬ কল্প দুর্গা পুজো হতো, যা পূর্বে শুরু করেছিলেন ভগবান রামচন্দ্র আদ্রা নক্ষত্রযুক্ত নবমীতে, পক্ষকাল ধরে সেই পুজো চলে । তাই দামোদর শেখর সিংদেও সেই ধার নগরের বংশধর হওয়ায় সেই আচার, আচরণ, নিয়ম, রীতি-নীতি মেনে পুজো শুরু করেন দুর্গার । বীরাচারী তন্ত্র মতে জিতাষ্টমীর পরদিন থেকেই পুজো শুরু হয়ে যায় শিখরবাসিনীর । তারপর দশমীর দিন ঘট বিসর্জনের মাধ্যমে মাকে বিদায় জানানো হয় ।পুজোয় বলি প্রথাও প্রচলিত রয়েছে । অন্যদিকে কাশিপুর রাজবাড়ির অন্দরেও দুর্গা পুজোর প্রচল হয়ে আসছে প্রায় কয়েক দশক করে । কাশিপুর দেবিবাড়ির ইতিহাস বিষয়ে জানা যায়, রাজা বল্লাল সেনের মেয়ে সাধনাকে বিয়ে করে যৌতুক হিসেবে কালো ঘোড়া ও রাজ তরবারি নিয়ে ফিরছিলেন কাশীপুরের তৎকালীন রাজা কল্যান শেখর। রাজা বল্লাল সেনের ছেলে লক্ষণ সেন মাঝপথে সেনাদের নিয়ে কুলদেবীকে নিয়ে যাওয়া থেকে আটকাতে যুদ্ধ করেন কল্যান শেখরের সঙ্গে। যুদ্ধে হেরে ফিরে যান লক্ষণ সেন। যুদ্ধের সময় কুলদেবীকে একটি গুহার মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেন । পরে মা দুর্গাকে কাশীপুরে নিয়ে গিয়ে সেখানে প্রতিষ্ঠার জন্য গুহার মধ্যে মায়ের আরাধনা করেন রাজা শেখর ও রানি সাধনা। সেখানেই তারা স্বপ্নাদেশ পান এই গুহাতেই মায়ের পুজো হবে কিন্তু মহাষ্টমীতে কুলদেবীর মায়ের পায়ের ছাপ পড়বে কাশিপুর দেবীবাড়িতে। সেই থেকে কাশীপুর রাজ পরিবারের দেবিবাড়িতে পূজিতা হয়ে আসছেন রাজরাজেশ্বরী শিখারবাসিনী দুর্গা। আজও পুজোর দিন মায়ের আগমনীর পায়ের ছাপ পড়ে দেবী বাড়িতে । বাইট: ১) সৌমেশ্বরলাল সিংহদেও (কাশিপুর রাজ পরিবারের সদস্য) ২) দিব্যজ্যোতি প্রসাদ সিংহদেও (কাশিপুর রাজ পরিবারের সদস্য) ৩) গৌতম চক্রবর্তী (প্রধান পুরোহিত) ৪) WT