उत्तर बंगाल के विकास को लेकर भाजपा ने केंद्र-राज्य पर कटाक्ष

*উন্নয়নের পাঁচালি" বনাম উন্নয়নে উত্তরের বঞ্চনা" , মঙ্গলে উন্নয়নের খসড়া প্রকাশের পরই উত্তরঙ্গের বঞ্চনার খসড়া হাতে বিজেপি বিধায়কদের* মঙ্গলবার ১৫ বছরের কাজের খতিয়ান হিসাবে ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ পেশ করেছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় । গত দেড় দশকে তাঁর সরকার কী কী করেছে তার খতিয়ান। মহিলা থেকে পরিযায়ী শ্রমিক, ছাত্র-যুব থেকে বৃদ্ধ, কৃষক থেকে তফসিলি জাতিভুক্ত, সংখ্যালঘুদের কী কী দিয়েছে তাঁর নেতৃত্বধীন সরকার , সবটাই তথ্য সমেত তুলে ধরতে দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ, ‘দাতা’র ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের এই উন্নয়ন বা বলাবাহুল্য "উন্নয়নের পাঁচালি" কে হাতিয়ার করেই এবার মাঠে নামল উত্তরের বিরোধী শিবির। গেরুয়া গড়ে ঠিক কতটা পারিকাঠামো গত উন্নয়ন হল তার খসড়া নিয়ে বুধবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করলেন উত্তরবঙ্গের বিজেপি বিধায়কদেরা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন , রাজ্য বিধানসভার বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ , রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মন , ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভার বিধায়ক শিখা চ্যাটার্জি , মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মন, ফাঁসিদেওয়া বিধানসভার বিধায়ক দুর্গা মুর্মু ও শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি অরুন মন্ডল। কয়েক বছর ধরেই তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবে বলতে চাইছে, কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের হাত থেকে সব কিছু কেড়ে নিচ্ছে। পক্ষান্তরে, মমতা সেই মানুষের হাতেই সাধ্যমতো দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এখানেই আপত্তি তুলেছেন বিজেপি বিধায়কদেরা৷ উত্তরের পরিকাঠামো গত উন্নয়নের খামতি যেমন তারা তুলে ধরেছেন অন্যদিকে চা শিল্প থেকে শিল্প তালুকের বেহাল দশার কথাও তারা তুলে ধরেন৷ পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারের বরাদ্দ অর্থের বঞ্চনার কথাও তুলে ধরা হয় এই খসড়ায়। রাজ্য বিজেপির সাধারন সম্পাদক তথা ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মন প্রথমের অর্থবর্ষে উত্তরবঙ্গের জন্য বরাদ্দ অর্থ নিয়ে রাজ্যের সরকারকে একহাত নেন৷ তার বক্তব্য , "তিন দশমিক সাত লক্ষ কোটি টাকার রাজ্য বাজেটে উত্তরবঙ্গের জন্য বরাদ্দ ৮৬১ কোটি টাকা৷ যা শূন্য দশমিক শূন্য শূণ্য শূন্য২ শতাংশ। কলকাতায় সামান্য একটা প্রজেক্ট তৈরি করার জন্য যে পরিমান অর্থ বরাদ্দ করা হয় , তার সিকিভাগ টাকাও উত্তরবঙ্গের জন্য ব্যায় করা হয় না৷ জাতীয় সড়ক বা এশিয়ান হাইওয়ে তৈরিতে জমি জট। কেন্দ্রে সরকার চা বাগানের ক্ষেত্রে ৩০০ কোটির বেশি টাকা বরাদ্দ করেছে কিন্তু রাজ্যের সরকার সেই অর্থ ব্যায় করতে নারাজ। স্বাস্থ্য ব্যাবস্থায় কেন্দ্রের সরকারের বরাদ্দ অর্থ ব্যাবহার করতে অনীহা রাজ্যের সরকারের৷ শিলিগুড়িতে রিঙ্গ রোড তৈরির জন্য কেন্দ্র সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বরদ্দ করেছে কিন্তু সেই রিঙ্গ রোড আদেও কবে হবে তা জানা নেই। হাসিমারায় সাধারণ মানুষের জন্য টার্নিমাল তৈরিতে ৩৭.৭৪ একর জমি রাজ্য সরকার দিচ্ছে না বলেই টার্মিনাল আটকে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের মানুষ মনে করেন অথবা করেছেন না৷ সামান্য নাগরিক অধিকার থেকে আমরা বঞ্চিত। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সরকার উন্নয়নের কাজে বিভিন্ন ধরনের বাঁধাদান করছে এবং আমাদেরকে যে তিমিরেই ছিলাম সেই তিমিরেই রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে।" অম্যদিকে শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বঞ্চনার খসড়া প্রসঙ্গে বলেন , "যে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মানের কথা মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেন সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় না প্রাথমিক স্কুল ? রাজ্যের সাধারণ মানুষ যদি এগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় বলেন তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব৷ চিকিৎসা অবস্থার করুন অবস্থা। মানুষের সাথে ফাজলামো হচ্ছে ? বার্ন ইউনিট নেই , ক্যাথ ল্যাব নেই , নিউরো সার্জেন নেই , প্লাস্টিক সার্জেন নেই কি হচ্ছে এগুলো ? আমরা আর কতদিন এভাবে পড়ে পড়ে মার খাবো। চা বাগানের নূন্যতম মজুরির কেন কোন স্থায়ী সমাধান হল না , চা বাগানের জমিতে বসবাসকারী মানুষের ল্যান্ড রাইটস দিতে হবে৷ পাট্টার নাম করে প্রতারণা। উত্তরবঙ্গের শিল্প তালুক গুলোতে গরু চড়ে বেড়াচ্ছে। গান করাচ্ছেন উন্নয়নের পাঁচালি না মানুষ ওটা বলছে মিথার ফুলঝুরি।" অন্যদিকে বিধায়কদের বঞ্চনার খসড়া নিয়ে বিজেপি বিধায়কদেরই পাল্টা প্রশ্ন করলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। মেয়রের বক্তব্য , "বিপুল পরিমান সিট তারা উত্তরবঙ্গ থেকে জিতেছে , এত গুলো বছরে তারা কি করলেন ? উত্তরবঙ্গে কি কাজ হয়েছে তা বলতে গেলে আমাকে লম্বা ইতিহাস বলতে হবে৷ ২০১১ সালের আগে কটা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এখন কতগুলো রয়েছে ? ছিট মহলের উন্নয়নের অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল তা দিয়ে জয়ী সেতু তৈরি হয়েছে। ফারাক্ক সেতু কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন। কেন বিকল্প সেতু সেখান দিয়ে তৈরি হল না , ফারাক্কা ব্রীজ তো উত্তরবঙ্গের প্রবেশ দ্বার। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় চেয়েছিলাম , সেটা কি হয়েছে ? একটা আইআইটি চাই তার কোন পরিকল্পনা কি আছে ? প্রক্ষান্তরে রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১০০ কোটি টাকা ব্যায়ে হাসপাতাল করছে৷ এখানে বড় একটা ক্রিকেট স্টেডিয়াম হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে যা উন্নয়ন হয়েছে ৩৪ বছরে বাম আমলে হয়নি। বিজেপিকে বলতে চাই , উত্তরবঙ্গে জেতার পর কেন্দ্র থেকে কি করেছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক। ভোটের সময় এরা আলাদা রাজ্যে দাবি আর জাতপাত , ধর্ম নিয়ে ভোট করতে আসবে।"