बाढ़ में गर्भवती महिला को अस्पताल पहुंचाकर आशा कर्मी सुमन लिंडा बनी मिसाल

বন্যার সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক অন্তঃসত্ত্বাকে হাসপাতালে পৌঁছে দেন আশাকর্মী সুমন লন্ডা। আশা কর্মীর কাজে সকলেই পঞ্চমুখ। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সম্মান জ্ঞাপন অনুষ্ঠান। নিজে বাড়িতে বন্যার জল। তার উপর ঘরে বৃদ্ধ বাবা অসুস্থ। এই পরিস্থিতিতে ৬ অক্টোবর রাত দেড়টায় জলপাইগুড়ি নাগরাকাটার খেরকেটা গ্রামের আশাকর্মী সুমন লিন্ডা–কে ফোন আসে। ফোনে তিনি জানতে পারেন, শীলাআ খারিয়া নামে এলাকার এক অন্তঃসত্ত্বার প্রসবযন্ত্রণা উঠেছে। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু তা কীভাবে সম্ভব? ডায়নারের ওপর টানাটানি সেতু ভেঙে তো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সবটা জেনেও দুর্যোগের রাতে ঝুঁকি নেন ওই আশাকর্মী। অসুস্থ বাবাকে ঘরে রেখে রাতে দেড়টায় একা বেরিয়ে পড়েন। চারদিকে জঙ্গল। ঘুটঘুটে অন্ধকার। হাতি-গন্ধার, চিতাবাঘের হামলার ভয়। কিন্তু সব প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে সুমন হাঁটে পৌঁছে যান ওই অন্তঃসত্ত্বার বাড়িতে। তারপর কোনে মতো একটা গাড়ি সংগ্ৰহ করে তাতে চাপিয়ে অন্তঃসত্ত্বাকে নিয়ে আসেন নাগরাকাটার টন্ডুতে, ভেঙে পড়া সেতুর কাছে। নদীর ধারে এনডিআরএফ কর্মীদের দেখতে পেয়ে স্পীড বোটে পার করে দেওয়ার অনুরোধ জানান। পুরো ঘটনা শুনামাত্র সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। গাঠিয়া ও ডায়না নদী পেরিয়ে প্রসবযন্ত্রণাে কাতর অন্তঃসত্ত্বাকে এপারের দিকে নিয়ে আসেন আশাকর্মী। খবর পেয়ে বিএমওএইচ ইরফান মোল্লা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন নদীর ঘাটে। ‘নিশ্চয় যানে’ চাপিয়ে প্রথমে সুলকাপাড়া গ্রামীণ হাসপাতাল, পরে মাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই অন্তঃসত্ত্বাকে। পুরো রাস্তার সঙ্গে ছিলেন আশাকর্মী সুমন। রাত পেরিয়ে পরদিন ভোরে ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শিপলা। সদ্যোজাতের নাম রাখা হয় ‘বন্যা’। শুধু একজন নয়, নাগরাকাটার দুর্গত এলাকায় পড়ে থেকে ভালো কাজের জন্য ওই আশাকর্মীর সাথে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মী-আধিকারিক মিলিয়ে জলপাইগুড়ি জেলার ৪২ জনকে পুরস্কৃত করা হয় এদিন। এর মধ্যে কলকাতা থেকে ভার্চুয়ালি ৮ জনকে পুরস্কৃত করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশে পুরস্কারপ্রাপকদের নাম ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্য সাচিব মনোজ পন্থ। জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের দপ্তর থেকে তাঁদের হাতে পুরস্কার ও মুখ্যমন্ত্রীর শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের পরে জেলাশাসকের দপ্তর থেকে বাকিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন রাজ্যের মন্ত্রী বুলুচিক বরাইক, জেলাশাসক শমা পারভীন, পুলিশ সুপার খণ্ডবাহাল উমেশ গণপত। দড়ি বেয়ে নদী পেরিয়ে নাগরাকাটার বন্যা দুর্গত এলাকায় পৌঁছেছিলেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ইরফান মোল্লা। এদিন তাঁকেও পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া এদিন মুখ্যমন্ত্রী যাঁদের ভার্চুয়াল পুরস্কৃত করেন তাঁরা হলেন, সিভিল ভলান্টিয়ার অজিত রায়, ফুলবাড়ি দমকল কেন্দ্রের আধিকারিক রাজীব কুণ্ডু, বনকর্মী বঙ্কিম মণ্ডল, বিদ্যুৎ দপ্তরের নাগরাকাটার স্টেশন ম্যানেজার রাজু তেওপ্পোয়, ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ, ময়নাগুড়ির বিডিও প্রসেনজিৎ কুণ্ডু ও মাল মহকুমা(sh)াশক শুভম কুণ্ডল। রিপোর্ট- প্রদ্যুৎ দাস ক্যামেরা- ঋষি চক্রবর্তী ( জলপাইগুড়ি )